The news is by your side.

প্রশ্ন কী, কেন করা হয়, প্রশ্নের প্রয়োজনীয়তা, প্রশ্ন কি সমস্যার সমাধান হতে পারে?

প্রশ্ন কী, প্রশ্ন করা কেন হয়? প্রশ্নের প্রয়োজনীয়তা কী? প্রশ্ন কি কখনও সমস্যার সমাধান হতে পারে?

প্রশ্ন কী?

প্রশ্ন (Question) কী, এই প্রশ্নটি বোধহয় অনেকেই প্রথম শুনে থাকবেন। এটি একটি সহজ বিষয়। কোন কিছু সম্পর্কে জানতে চাওয়াইতো প্রশ্ন। তুমি কেমন আছো? তোমার নাম কী? তুমি কি আমার সাথে ঘুরতে যাবে? নানাবিধ প্রশ্ন। পৃথিবীর যে দিকে তাকানো যায় সেদিকেই শুধু প্রশ্ন আর প্রশ্ন। এত প্রশ্নের ভীরে আমরা প্রায়শ্চই প্রশ্ন করতেই ভুলে যাই। তাই প্রশ্নের সংজ্ঞা ভুলে যাই।

 

আচ্ছা প্রশ্নের সংজ্ঞা কী? না ঠিক তা না, পরীক্ষার জন্য যে প্রশ্নপত্র করা হয় বা তার ভেতরে যে প্রশ্নগুলো থাকে সে প্রশ্নের কথা বলছি না। যেমন আমি বললাম, আপনার নাম কী? এজাতীয় প্রশ্নের সংজ্ঞা কী? মনের মধ্যে যে প্রশ্ন জাগে তা জানতে চাওয়া? ভাবার বিষয়তো!

মনের মধ্যে প্রশ্ন (?) জাগে তা জানতে চাওয়া (?)। তার মানে মনের ভেতরে যা সম্পর্কে অজানা থাকে তা জেনে নেওয়া? তাহলে উত্তর জানার পরেও কেন অন্যের মতামত (?) নিতে জিজ্ঞাসা করি? নিজেকে ঝালাই করার জন্য? নিজেকে ঝালাই করার জন্য যা জানতে চাই তাও কি প্রশ্ন? তাহলে প্রশ্ন কী? প্রশ্নের বিপরীত যদি উত্তর হয় তাহলে আমার উত্তর জানা বিষয়ে কেন প্রশ্ন করি অপরকে? মনের ঘাটতি পূরণ? জ্ঞাত বা অজ্ঞাত বিষয়ে আয়ত্বকরণ বা বিবেকের পরিমার্জনকল্পে বা জ্ঞাত বিষয়ে মাপকাঠির পূর্ণতা আনয়নকল্পে মনের বিশেষ কিছু চাহিদাই কী তাহলে প্রশ্ন? হতেই পারে কেননা আমরা সচরাচর কয়েকটি কাজতো করিই?

 

(১) অজানা বিষয়কে জানতে প্রশ্ন করি।

(২) জানা বিষয়ের স্বীকৃতি পেতে প্রশ্ন করি।

(৩) মনের ভেতরে জানার ঘাটতি আছে বলে মনে করিলে প্রশ্ন করি। (এটা কঠিন অনেকের জন্য)।

(৪) কখনও নিজের কাছেই নিজে প্রশ্ন করি। (উত্তম প্রশ্ন)

(৫) জানা বিষয় নিয়ে অপরকে যাচাই করতে প্রশ্ন করি।

(৬) শিক্ষার্থীকে প্রশ্ন করি শিক্ষক হিসেবে বা সহায়ক হিসেবে। (যা আমার জানা)

(৭) এমন কিছু প্রশ্ন করি প্রশ্নটি কী বা তার উত্তরইবা কী তা না জেনেও।

 

উপরের যতগুলো কারণে প্রশ্ন করি না কেন আমার মনে হয় নিচের বিষয়টিকে স্বীকৃত করে। অর্থাৎ প্রশ্ন হলো- জ্ঞাত বা অজ্ঞাত বিষয়ে আয়ত্বকরণ বা বিবেকের পরিমার্জনকল্পে বা জ্ঞাত বিষয়ে মাপকাঠির পূর্ণতা আনয়নকল্পে মনের বিশেষ কিছু চাহিদা যা অন্যের মাধ্যমে বা নিজ থেকে পূরণ হয়।

তাহলে আমি এখানে বিষয়গুলোকে যদি আলাদ করে বলি তা হলে-

(ক) জ্ঞাত বা অজ্ঞাত বিষয়ে আয়ত্বকরণ,

(খ) বিবেকের পরিমার্জন করার জন্য,

(গ) জ্ঞাত বিষয়টি মাপকাঠির পূর্ণতায় আনতে,

(ঘ) মনের বিশেষ কিছু চাহিদা পূরণে

অন্য কোন ব্যক্তি, বস্তুর মাধ্যমে বা নিজে থেকেই পূরণ হয়।

 

প্রশ্ন করা কেন হয়?

এটি নিজেই একটি প্রশ্ন। প্রশ্ন করা কেন হয়? আমার মনে হয়, উপরের যে বিষয়গুলো বিভিন্ন পয়েন্টে তুলে ধরা হয়েছে সম্ভবত এগুলোই কারণ। কোন অজনাকে জানা, জানা বিষয়ের সঠিকতা যাচাই বা পাকাপোক্তকরণ, স্বীকৃতি আদায়, জানায় ঘাটতি থাকলে, অন্যকে হেয় করতে, খাটো করতে, বিপদে ফেলতে বা অন্যের অসহায় অবস্থা অবলোকন করতে বা কারো বকবকানী থামাতে, শিক্ষার্থীদের বুঝানো বিষয়ে গ্রহণ পর্যায় যাচাই করতে প্রশ্ন করে থাকি। মূলত আমাদের প্রশ্ন করার এগুলোই কারণ।

 

প্রশ্নের প্রয়োজনীয়তা কী?

প্রশ্নের প্রয়োজনীয়তা কী? প্রশ্নের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা হলো প্রশ্ন করতে না জানলে কিছু জানা যায় না। পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকে মানব মনে ক্ষণে ক্ষণে প্রশ্ন জেগেছে বলেই তার সমাধান এসেছে। শিশুর মনের মধ্যে নানা প্রশ্ন জাগে তার উত্তরগুলো বড়রা হাসতে হাসতে দিয়ে থাকে।

 

ফলে শিশুর মস্তিষ্কের গঠন যেমন হয় মজবুত তেমনি শিশু আয়ত্ব করতে পারে জগতকে। এমনকি শিশু বা মানব মনে এমন কিছু প্রশ্ন জাগে নিজের কাছে, নিজেই একটা সত্য বা মিথ্যা উত্তর আয়ত্ব করে । এক সময় সত্য উদঘাটনে তার পদচারণা বাড়ে এবং সত্য বেরিয়ে আসে। প্রশ্নের উত্তর সব সময় ইতিবাচক হতে পারে কখনও হতে পারে নেতিবাচক। স্পষ্টত প্রশ্ন আমরা নিজ এবং অন্যকে করে থাকি। কিছু প্রশ্ন নিজের বিবেক বা মনকে তাড়িত করে একটা সমাধানে নিয়ে যায়।

 

প্রশ্ন কি কখনও সমস্যার সমাধান হতে পারে?

প্রশ্নটি বেশ জটিল। প্রশ্ন কোন সমস্যার সমাধান দিতে পারে কি না? প্রশ্নেরতো হয় উত্তর তাহলে সমাধানের কথা আসছে কেন? সমাধানতো হয় সমস্যার। তবে যাই হোক, তার আগে আরেকটি বিষয় পরিষ্কার হওয়া প্রয়োজন সমাধান কখনও প্রশ্ন হতে পারে কি না? মানে কোন সমাধান নিজেও একটি প্রশ্ন কি না? সমাধানের সমাধান প্রয়োজন আছে কি না? বিষয়গুলো কি খুব জটিল হয়ে যাচ্ছে?

 

বিষয়টির স্বচ্ছ ধারণা নিতে একটি উদাহরণ উল্লেখ করা যেতে পারে। এককালে মানুষ গরমের হাত থেকে বাঁচার জন্য বাতাসের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতে লাগলো। ঠিক এমনও না। ঠিক বাতাস পাওয়ার জন্য সহজতর উপায় খুঁজতে লাগলো। সংক্ষেপে তা কাপড়, চওড়া পাতাযুক্ত গাছের পাতা, হাত পাখা ব্যবহার শুরু করলো। কিছুটা সমস্যার সমাধান হলো কিন্তু ঘুমের মধ্যে হাত নাড়ানো এবং এতে প্রাপ্ত বাতাস মানুষের ভেতরে আরও সমস্যা তৈরি করলো।

 

মানুষ বিদ্যুতের আবিষ্কারকে ব্যবহার করে ফ্যানের মাধ্যমে একটা সমাধান খুঁজে পেল। কিন্তু ফ্যানের শব্দ, বাতাসের সমবিভাজনতা তাদের মনে সমস্যার তৈরি করলো। তার সমাধানকল্পে এসিরুমের ব্যবহার শুরু হলো তাতেই কি সমাধান হলো ? কারো বেশি ঠান্ডা কারো কম, কারো এলার্জি, কারো সর্দি, কারো টনসিলের প্রদাহ, কেহবা ভাবছে ঘরে ঢুকেই কেন কিছুক্ষণ গরম লাগবে? কেন সুইচ হাতে নেব? ইত্যাদি ইত্যাদি সমস্যা আরও দেখা দিতে লাগলো। জানি না এর সমাধান কী?

 

সংক্ষিপ্তকরণ:

উপরের উদাহরণকে যদি সংক্ষেপে আনতে চাই, সমাধানও সমস্যা হয়ে যাাচ্ছে। মানে মনের ভিতের প্রশ্নের যে সমাধান বা উত্তর ছিলো তাও একটি বড় প্রশ্নের আকার ধারণ করছে। তার অর্থ কোন প্রশ্নের চিরস্থায়ী সমাধান বা উত্তর নেই। তারপরেও কিছু সমস্যার বা প্রশ্নের উত্তরতো অবশ্যই আছে। ইরানের রাজধানীর নাম কী? উত্তরতো আছেই। উত্তর পাওয়া হোক তা স্বচ্ছ, পরিষ্কার, ঘোলাটে বা আরেকটি প্রশ্নের জম্মদাতা একটা সমাধানতো আসবেই।

সুতরাং প্রশ্ন মানেই একটা পর্যায়ের সমাধান মানে উত্তর।

(প্রশ্ন নিয়ে আরও কিছু কথা পরবর্তী পর্বে সমাপ্ত হবে। কেননা এখানে তিনটি বিষয় চলে এসেছে। প্রশ্ন, উত্তর এবং সমাধান)

The Difference Between a Solution and Answer

To learn education related more post click here.

Leave A Reply

Your email address will not be published.